সজল মিত্র
আসন্ন নির্বাচনে বামফ্রন্টের মুখ কে হবে? এটা এখন নানা মহলের প্রশ্ন। এবং প্রশ্নটা অবান্তর নয়। বরং বেশ প্রাসঙ্গিক। যতদিন জ্যোতি বসু ছিলেন, ততদিন নির্বাচনের মুখ কে, তা নিয়ে সংশয় ছিল না। ২০০১, ২০০৬ বা ২০১১ তেও সংশয় ছিল না। আমি মনে করি, সঠিক মুখকেই সামনে রাখা হয়েছিল।
এবার এই কঠিন পরিস্থিতিতে তাই প্রশ্নটা আরও বেশি প্রাসঙ্গিক। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য আর নির্বাচনে দাঁড়াবেন না। রাজ্য সম্পাদক হওয়ার পর সূর্যকান্ত মিশ্রও আর দাঁড়াবেন বলে মনে হয় না। নারায়ণগড় মোটেই নিরাপদ কেন্দ্র নয়। তাছাড়া, রাজ্য সম্পাদক নিজের কেন্দ্রে ব্যস্ত থাকবেন, সেটা কাম্য নয়। তাঁকে সারা রাজ্যে ঘুরতে হবে।
তাহলে উপায় কী ? এই দুজনকে ছাড়া তৃতীয় মুখই খুঁজতে হবে। গৌতম দেব শারীরিকভাবে ভাল জায়গায় নেই। তাঁকেও এই আলোচনার বাইরে রাখাই ভাল।
তাহলে বামেদের লড়াই করতে গেলে কী করতে হবে? আমি জ্ঞান দেব, সেই ধৃষ্ঠতা আমার নেই। তবে নিজের ভাবনা মেলে ধরতে পারি। আমি মনে করি, নির্বাচনে লড়তে গেলে অবশ্যই একটা মুখ দরকার। আমরা জিতলে কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন, সেটা স্পষ্ট হওয়া দরকার। এবং এই মুখ হতে পারেন মহম্মদ সেলিম। এই মুহূতে আর কোনও বিকল্প মুখের কথা মনে পড়ছে না।
কেন সেলিম, তার স্বপক্ষে অনেক যুক্তি দেওয়া যায়। ১) গোটা রাজ্যে পরিচিত মুখ। ২) বাংলা ছাড়াও হিন্দি, উর্দু, ইংরাজিতে সাবলীল। ৩) দীর্ঘদিন সাংসদ ছিলেন, রাজ্যে মন্ত্রীও ছিলেন। প্রশাসন সম্পর্কে ধারণা আছে। ৪) গ্রাম বাংলাকে মোটামুটি চেনেন। ৫) যুবকদের সঙ্গে মিশতে পারেন, তাদের ভাষায় কথা বলতে পারেন। ৬) সংখ্যালঘু। ফলে, সংখ্যালঘুদের আস্থা কিছুটা ফিরে আসতে পারে ৭) সুবক্তা। ব্রিগেডে তাঁকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরা হয়েছিল। ৮) তৃণমূল যে ভাষা বোঝে, সেই ভাষাতেই কথা বলতে জানেন।
আরও অনেক যুক্তি আছে। বাম নেতারা নিশ্চয় ভাবছেন। এবার দ্বিধা ছেড়ে নামটা ঘোষণা করা হোক। সেলিমকে সামনে রেখেই লড়াই হোক।