ময়ূখ নস্কর
সইফ আলি খান এবং করিনা কাপুর তাঁদের সদ্যোজাত পুত্রের নাম রেখেছেন তৈমুর। এতে দেশজুড়ে অনেকের চর্মরোগ দেখা দিয়েছে। চলতি ভাষায় যাকে বলে চুলকানি। তৈমুর লঙ্গ লোকটি যে লুঠেরা, গণ হত্যাকারী তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু তৈমুর নাম অন্য কারোর হতে পারবে না কেন?
আওরঙ্গজেবের পুরো নাম আবুল মুজফফর মুহিউদ্দিন মহম্মদ আওরঙ্গজেব। স্বাধীনতা সংগ্রামী মৌলানা আবুল কালাম আজাদ বা বামপন্থী নেতা মুজফফর আহমেদ কি আওরঙ্গজেবের মতো ধর্মান্ধ ছিলেন? তারা ছিলেন যথার্থ ধর্মনিরপেক্ষ। আলাউদ্দিন খিলজি লোকটি মোটেই সুবিধের ছিলেন না। কিন্তু উস্তাদ আলাউদ্দিন খান ছিলেন সুরসাধক। সরস্বতীর সাধক।
স্বাধীনতা আন্দোলনের বিশ্বাসঘাতক ছিলেন নরেন গোঁসাই। নরেন আর নরেন্দ্র একই কথা। নরেন্দ্র মোদী আর নরেন গোঁসাই কি এক লোক? মারাঠা বর্গীদের নেতা ভাস্কর পণ্ডিত, বাংলার গ্রামের পর গ্রাম শ্মশান করে দিয়েছিল। বাংলা ও ওড়িশার অসংখ্য মন্দির ধ্বংস করেছিল কালাপাহাড়। কালাপাহাড়ের আসল নাম রাজু। মহম্মদ ঘোরিকে ভারতে ডেকে এনেছিলেন রাজা জয়চন্দ্র। ভারতে ইংরেজ শাসন এবং মন্বন্তরের সূচনা করেছিলেন রবার্ট ক্লাইভ। স্বদেশি আন্দোলনের যুগে অত্যাচারী পুলিশ অফিসার ছিলেন চার্লস টেগার্ট। ভাস্কর, রাজু, জয়, রবার্ট, চার্লস এগুলো কিন্তু অত্যন্ত জনপ্রিয় নাম।
শাস্ত্র খুলে দেখুন, পরশুরামের আসল নাম ছিল রাম। তিনি ২১ বার পৃথিবীর সব ক্ষত্রিয়কে হত্যা করেছিলেন। অর্থাৎ ২১ বার গণহত্যা করেছিলেন। এছাড়াও তিনি নিজের মাকে হত্যা করেছিলেন। মহর্ষি বিশ্বামিত্রের আসল নাম কৌশিক। তিনি ওপর মহর্ষি বশিষ্ঠের সন্তানদের হীনভাবে হত্যা করেছিলেন। কোনও বাবা-মা পুত্রের নাম রাম বা কৌশিক রাখলে আমরা কি হাহাকার করি? তাহলে সইফ-করিনার ছেলের নাম নিয়ে আমাদের এত মাথাব্যথা কেন?
ডি এম কে নেতা করুণানিধির ছেলে স্তালিন। তিনি কমিউনিস্ট হননি, একনায়কও হননি। সীতারাম ইয়েচুরি রাম বা সিতার ভক্ত হননি। দেশজুড়ে এত মানুষের নাম রবীন্দ্রনাথ, সুভাষ। তারা কেউ বিশ্বকবি, নেতাজি হননি।
তাহলে সইফ-করিনার ছেলে তৈমুর লঙ্গ হবে কেন?