নন্দ ঘোষ
যে সব কমিউনিস্টরা বাস্তব পরিস্থিতি না বুঝে কেবল নীতি নীতি বলে চেঁচায় লেনিন তাঁদের ‘‘পুঁথি পড়া কমিউনিস্ট’’ বলেছিলেন।
কমিউনিস্টরা নাকি পরলোক, পরজন্ম মানে না। মানলে বলত, লেনিনের যুগের ‘‘পুঁথি পড়া কমিউনিস্টরা” এই জন্মে প্রকাশ কারাত হয়ে পৃথিবীতে এসেছেন। তিনি মাঝে মাঝে এমন হাবভাব দেখান যে মনে হয় লেনিন, কার্ল মার্ক্সের ঠাকুরদা নবরূপে পৃথিবীতে এসেছেন।
পশ্চিমবঙ্গে জোট যাতে না হয়, তার জন্য সবরকমের চেষ্টা করেছেন কমরেড কারাত। আপাতত সেই চেষ্টাকে ঠেকানো গেছে, কিন্তু কারাত এবং তাঁর অনুগামীদের মতিগতি বোঝা যায়নি। ভোটের রাজনীতি করতে এসেছেন, ভোটে জিতে ক্ষমতায় আসতে হবে। ক্ষমতায় এলে তবেই বামপন্থী নীতিকে কাজে রূপান্তরিত করা যাবে। এই সারসত্যগুলোকে কারাত সাহেব আর তাঁর ভক্তরা কিছুতেই বুঝতে চান না। কাজের নামে অষ্টরম্ভা, খালি নীতি আর নীতি! কবেকার কোন দলিলে কি লেখা আছে তাই নিয়ে মাতামাতি।
আরে মশাই ভোটে জিততে না পারলে, তৃণমূলের ঠ্যাঙাড়ে বাহিনির মারে পার্টিটা উঠে গেলে, ওই সব দলিল নিয়ে কি গুলে খাওয়া হবে? আর নীতির কি ছিরি! ইউ পি এ সরকারকে সমর্থন করলে জাত যায় না। জোট করলে জাত যায়? পরমাণু চুক্তি ঠেকাতে গিয়ে দলের ভবিষ্যতের ওপরে পরমাণু বোমা ফেলে দিলেন। এই বুদ্ধি নিয়ে রাজনীতি করা যায় না। বড়জোর কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলে পড়ানো যায়।
অথচ রাজনীতি করে করে তাঁর চুল পেকে গেল। কথায় বলে অল্প বয়সে চুল পাকলে তাঁর দুঃখ চিরকাল। প্রকাশ কারাতের চুল অল্প বয়সে পাকেনি। সঠিক সময়েই পেকেছে। কিন্তু ভারতের মাটিতে রাজনীতি করার মতো পাকাবুদ্ধি তাঁর এখন হয়নি। এই অরাজনৈতিক নেতার পাল্লা থেকে বেরতে না পারলে সি পি এমের দুঃখ চিরকাল থাকবে।
প্রকাশ কারাতের রাজনীতি মানে এককালে জে এন ইউ তে ছাত্র রাজনীতি করেছিলেন। সেই পুজি নিয়ে তিনি বাংলার ৩৪ বছর সরকার চালানো নেতাদের ওপর ছড়ি ঘোরান। বাংলার কথা ছেড়ে দিন। নিজের রাজ্য কেরালায় সরকার চালানোর ক্ষমতা তাঁর আছে? সবাই বলছে এবার কেরালায় বামেরা ক্ষমতায় আসবে। সৎসাহস থাকলে প্রকাশ কারাত নিজে সেখানে ভোটে দাঁড়ান। মুখ্যমন্ত্রী হন। দেখি মার্কসীয় কায়দায় কেমন সরকার চালাতে পারেন। দেখি, কেমন বিপ্লব আনতে পারেন।