রাকেশ বটব্যাল
জোট নিয়ে বেঙ্গল টাইমসে সরল বিশ্বাসের লেখা পড়লাম। একমত হতে পারছি না। তাই ওপেন ফোরামে নিজের পাল্টা মতামত লিখছি।
সরলবাবুর আশঙ্কাগুলো যে একেবারেই অমূলক, এমনটা বলব না। অনেক ক্ষেত্রেই সেই আশঙ্কার একটা ভিত্তি আছে। কিন্তু আমরা শুরুতেই যদি খারাপটা ধরে নিই, তাহলে ইতিবাচক ফল আশা করা কঠিন। জোটের সুফল নিশ্চয় আছে। আছে বলেই তৃণমূল ভয় পাচ্ছে।
কংগ্রেস জোট করবে কিনা, সেটা তাদের ব্যাপার। কিন্তু বাম দল যে জোটের ব্যাপারে আন্তরিকভাবে উদ্যোগী, এ নিয়ে সন্দেহ নেই। সেই বার্তাটাই তাঁরা দিচ্ছেন। শরিকদের কারও কারও হয়ত আপত্তি বা দ্বিধাদ্বন্দ্ব আছে। সেটা ঝেড়ে রেখে, তাঁরাও সায় দিয়েছেন জোটের আলোচনায়।
হ্যাঁ, বাম দলগুলিতে অনেকটাই আত্মত্যাগ করতে হবে। বড় শরিক হিসেবে সিপিএম-কেই বেশ আসন ছাড়তে হবে। শরিকদেরও ছাড়তে হবে। এই আত্মত্যাগের মানসিকতা না থাকলে জোট হওয়া মুশকিল। উত্তর বঙ্গে বামেরা একা লড়লে হয়ত ফল ভাল হত। কিন্তু সেখানে বাম-কং জোট হলে তৃণমূল অনেকটাই কমে যাবে। উত্তরবঙ্গের ৫৪ ও মুর্শিদাবাদ জেলা মিলিয়ে ৭৬ আসন। জোট হলে তৃণমূল হয়ত কুড়িটাও পাবে না। এই ধাক্কাটা যদি উত্তর থেকে শুরু হয়, তার প্রভাব দক্ষিণেও পড়তে বাধ্য। বামেরা কটা আসনে জিতল, কংগ্রেসই বা কটা আসন পেল, সেটা বিবেচ্য নয়। আসল কথা হল, এই সরকারটাকে সরাতে হবে। তার জন্য সবাইকেই কিছু না কিছু আত্মত্যাগ করতে হবে। জোট সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য নয়। বরং জোট হলে জয় আসবে, এই বিশ্বাসটা মনের ভেতর আনা দরকার। নিজেরা বিশ্বাস না করলে কর্মীদের বোঝাবেন কী করে ? সহজ কথা, তৃণমূল বিরোধী ভোট ভাগ হতে দেওয়া চলবে না। যতটা সম্ভব, এক বাক্সে আনতে হবে। কী করে এই বোঝাপড়া গড়ে তুলতে হয়, কী করে অন্যের জন্য জান লড়িয়ে দিতে হয়, বামপন্থীরা জানেন।
তাই বাম কর্মীদের অনুরোধ, জোট নিয়ে নেতিবাচক কথা বলবেন না। ইতিহাস বারবার সুযোগ দেয় না। যদি সত্যিই জোট ভেস্তে যায়, ইতিহাস ক্ষমা করবে না।