স্বরূপ গোস্বামী
কর্তা ধরে আনতে বললে পারিষদরা বেঁধে আনেন। আমাদের রাজ্যই বা ব্যতিক্রম হবে কেন ? বরং, এ ব্যাপারে বাংলা সারা ভারতকে পথ দেখাতে পারে। মুখ্যমন্ত্রী মনে করছেন, বিমানে জ্বালানি কম দিয়ে তাঁকে খুনের চক্রান্ত করা হয়েছে। রাজ্যের মন্ত্রী প্রকাশ্যে ক্যামেরার সামনে বলছেন, মুখ্যমন্ত্রীকে খুন করার চেষ্টা হয়েছে। অতএব, পুলিশকে তো কিছু একটা করতেই হবে। স্বত প্রণোদিত হয়ে পুলিশ মামলা রুজু করে দিল সেই পাইলটের বিরুদ্ধে।
ইঙ্গিতটা পরিষ্কার। যেহেতু মমতা নোট বাতিলের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন, তাই মোদি মমতাকে খুন করতে চাইছেন। তাই বিমানবন্দরের কর্মীদের হাত করেছেন। পাইলটকেও হাত করেছেন। পাইলটও মুখ্যমন্ত্রীকে খুন করতে গিয়ে নিজে মরতে রাজি হয়েছেন। এইসব গাঁজাখুরি তত্ব যাঁরা প্রচার করে বেড়াচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও মামলা হয় না। মামলা হয় সেই পাইলটের বিরুদ্ধে।
কোন ধারায় মামলা ? ৩০৭, ৩০৮, ১২০ বি। খুনের চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র ইত্যাদি ইত্যাদি। বাধ্য হয়েই আপাতত সেই পাইলটকে দায়িত্ব থেকে সরিয়েছে ইন্ডিগো। এতে তৃণমূল নেতৃত্ব নৈতিক জয় খুঁজে পেতেই পারেন। অবোধের যেমন গো–বধে আনন্দ। তেমনি পাইলটকে শাস্তিতে পাঠিয়ে শাসকেরাও আনন্দ পেতেই পারেন।
এ রাজ্যে সবকিছুই হয় মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায়। ধরে নেওয়াই যায়, এই মামলা রুজুটাও তাঁর অনুপ্রেরণা ছাড়া হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই যদি বলে বসেন খুনের চক্রান্ত, তখন কোন পুলিশের ঘাড়ে কটা মাথা? ভাবতে অবাক লাগে, কত অবলীলায় ‘খুনের চক্রান্ত’ বলে দেওয়া যায় ! পাইলট মুখ্যমন্ত্রীকে খুন করতে চেয়েছিলেন! বিমান দুর্ঘটনা হলে তাঁকেও যে মরতে হত, এই বোধটুকু নিশ্চয় পাইলটের ছিল। এটা জেনেও পাইলট মুখ্যমন্ত্রীকে খুন করতে চাইল।
অতিবড় পাগল ছাড়া কেউ বিশ্বাস করবে?
মুখ্যমন্ত্রীর উপর বা তাঁর মন্ত্রীদের উপর এখন আর রাগ হয় না। কিন্তু যে সব মিডিয়া ফলাও করে এইসব অভিযোগ ছাপে, এই আজগুবি অভিযোগগুলোকে আরও গ্লোরিফাই করে মুখ্যমন্ত্রীকে তুষ্ট করার চেষ্টায় মেতে থাকে, তাদের উপর সত্যিই রাগ হয়। সরকারি দাক্ষিণ্যভোগী একদল বুদ্ধিজীবী আছেন, যাঁদের মেরুদণ্ড নামের বস্তুটিই নেই। এবার সেই তালিকায় মূলস্রোত মিডিয়াও নাম লেখালো ? মিডিয়া, তুমিও কি মেরুদন্ড নবান্নে গচ্ছিত রেখেছো ?
Hats off !!
Simple brilliant !!