কুণাল দাশগুপ্ত
কিংবদন্তি সাংবাদিকও ৭৫ য়ে মোহনবাগান পাঁচ গোল খাওয়ার পর হাতে কলম তুলে নিতে পারেননি। সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে আত্মিক বা মাখোমাখো সম্পর্ক মোহনবাগানের বহুদিনের। অধিকাংশ ডার্বির আগেই পাল তোলা নৌকোকে ‘কুইন মেরি’ বানিয়ে দেওয়া হয়। যদিও ডার্বির পরিসংখ্যান বলছে, এই ম্যাচে মশালের দৌরাত্ম্য অনেক বেশি। ২৩ জানুয়ারি ডার্বির আগেও সংবাদমাধ্যমকে রাঙিয়ে তোলা হয়েছে সবুজ মেরুনে।
প্রথম দু ম্যাচে ছয় পয়েন্ট পাওয়ার ফলে মনোবল তুঙ্গে থাকবে সঞ্জয় ব্রিগেডের। তার উপর বিদেশিরা সবাই জেট গতিতে ছুটছে। আশায় বুক বাঁধতে বাধা কোথায় ? উল্টো দিকে দ্বিতীয় ম্যাচেই পয়েন্ট নষ্ট ইস্টবেঙ্গলের। মুম্বই এফ সি-র বিরুদ্ধে ফাঁকা গোলে বল ঠেলতে না পারা, এসবই ফলাও করে প্রচার হয়েছে। তার উপর রয়েছে র্যাান্টি, বেলো, ডংয়ের নামের প্রতি সুবিচার করতে না পারা। মেন্ডিকে নিয়ে বৃহদাকার প্রশ্নমালাও ইস্টবেঙ্গলকে পিছিয়ে দিয়েছে।
তবুও ২৩ জানুয়ারি লাল হলুদের ‘কদম কদম বাড়ায়ে’ যাওয়ার দিন হয়ে উঠতে পারে। ইস্টবেঙ্গল আন্ডারডগ আর মোহন বাগান ড্যাং ড্যাং করে ম্যাচ জিতে নিয়েছে, এমনটা সচরাচর হয় না। শেহনাজ, দীপকদের যেমন চোট আছে, তেমনই ফুসফুস ভর্তি অক্সিজেন নিয়ে নামবেন অবিনাশ, নারায়ণ, বিকাশরা। সঙ্গে রয়েছে খাবড়া, মেহতাবদের অভিজ্ঞতা। ভারী দল বা একবগ্গা প্রচার দিয়ে বড় ম্যাচ কব্জা করা যায় না। ৭৭ সালেও যায়নি। আনকোরা ইস্টবেঙ্গল দু গোল চাপিয়ে দিয়েছিল। নবাগত মিহির বসুর ভলি আর পিন্টু চৌধুরির ফ্রিকিক শুধু জাল নয়, মোহনবাগানের বুকও কাঁপিয়ে দিয়েছিল। এই ইস্টবেঙ্গলেও দুরন্ত শটে জাল কাঁপানো বা এক ফ্রিকিকেই তিন পয়েন্ট তুলে নেওয়ার ফুটবলার রয়েছে। মোহনবাগান যদি কাঁছা খুলে আক্রমণে যায়, তাহলে প্রতি আক্রমণের সুযোগ চলে আসবেই ইস্টবেঙ্গলের সামনে। র্যাান্টি-রফিকরা যদি ৭৬ এর কেষ্ট মিত্র না হয়ে যান, বা রেফারি কোনও রত্নশোভিত ঘোষের ভূমিকায় অবতীর্ণ না হন, তাহলে অকাল ফাগুনে গঙ্গাপারে আগুন লাগতেই পারে। আবার রবি ঠাকুরের ‘নৌকাডুবি’ও হতে পারে বঙ্গের গঙ্গায়। পরিসংখ্যান, আবেগ, ইতিহাস বলছে, এমন ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলই শেষ কথা বলে।
লাল হলুদ কর্তাদের কাজ, এখনকার ফুটবলারদের সামনে এই ইতিহাসটা একটু তুলে ধরা। প্রতিপক্ষ কি পাস, পিয়ং ইয়ং, আলজাওরা বা বেক তেরো সাসানার চেয়েও শক্তিশালী।