অজয় কুমার
কার বিরুদ্ধে কাকে প্রার্থী করা উচিত, এসব নিয়ে নানা জায়গায় নানা আলোচনা শুনছি। প্রথমেই বলে রাখি, আমি একজন বাম মনষ্ক মানুষ। তবে অন্ধ বাম নই। অনেক ক্ষেত্রে তাই বামেদের প্রচলিত মতামতের থেকে নিজের মতামতকে আলাদা মনে হয়।
আমি বিশ্বাস করি, এই সময়ে দাঁড়িয়ে শুধু দলীয় প্রার্থী দিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করা যাবে না। চাই বিশ্বাসযোগ্য কিছু মুখ। তিনি কোন কমিটির সদস্য, কত সালের পার্টি মেম্বার, এসব দেখলে চলবে না। গত দু বছর ধরে একটি নাম আমাদের পরিচিত। তিনি মৌসুমী কয়াল। কামদুনি আন্দোলনের সেই প্রতিবাদী মৌসুমী। তাঁকে যদি প্রার্থী করা যায়, তাহলে কেমন হয় ?
সিপিএম নেতৃত্ব দয়া করে তাঁকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরবেন না। তিনি যদি বিরোধীদের সম্মিলিত মুখ হয়ে ওঠেন, কেমন হয় ? দায়িত্ব নিতে পারেন বামপন্থীরা। তাঁরা মৌসুমীর সঙ্গে কথা বলুন। অন্যান্য দলের সঙ্গে কথা বলুন। এবং তাঁকে প্রার্থী করা হোক তৃণমূল জেলা সভাপতি ও খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিরুদ্ধে। কামদুনি আন্দোলনকে ভেঙে দেওয়ার পেছনে, মৌসুমীদের কোণঠাসা করার পেছনে সবথেকে বড় মাথা এই জ্যোতিপ্রিয়। মহিলাদের সম্পর্কে নানা আজেবাজে মন্তব্য করছেন। কখনও শালীনতা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। গোটা রাজ্যে ঘৃণার এক বাতাবরণ তৈরি করছেন। তাঁর জীবনযাপন ও দপ্তরের কাজকর্ম নিয়ে এত কেচ্ছা, একটু কান পাতলেই শোনা যায়। বাংলায় সুস্থ রাজনীতির স্বার্থেই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে হারানো দরকার। এবং সেই লড়াইয়ের মুখ হতে পারেন মৌসুমীই।
মৌসুমী সৎ, প্রতিবাদী। বিশ্বাসযোগ্য। টানা দু বছর ধরে লড়াই করে চলেছেন। সারা বাংলায় বেশ পরিচিত ও বিশ্বস্ত মুখ। একটি দিনের জন্যও কোনও দায়িত্বজ্ঞানহীন কথা বলতে শুনিনি। এমন মেয়েই তো হতে পারেন প্রতিবাদী নারীদের মুখ।
তবে তাঁকে কোনও দলীয় মঞ্চে তুলবেন না। তাঁর প্রচারে কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা থাকবে না। এক মঞ্চ থেকে বিভিন্ন নেতারা একযোগে প্রচার করুন। তিনি কোন দলের সমর্থক, এই নিয়ে দড়ি টানাটানি করবেন না।
মৌসুমী রাজি হবেন কিনা, জানি না। কিন্তু বামেরা উদ্যোগ নিয়ে দেখতে পারেন।