দিব্যেন্দু দে
হঠাৎ ফেসবুকে এক লাইনের একটি পোস্ট চোখে পড়ল। এবার গরমের ছুটিতে যাবে সিবিআই। কখনও কখনও অল্প একটি বা দুটি কথাও বড় বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে। অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ মনে হয়।
সেই যে তাপস পাল ও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধরা হল। তিন–চারদিন নানা তৎপরতা চলল। অনেক অজানা খবর বেরিয়ে এল। তারপর সেই যে শীতঘুমে গেল, সেই ঘুম আর ভাঙে না। সিবিআই নামক প্রতিষ্ঠানটি যত দিন যাচ্ছে, ততই তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে। উঠতে বললে ওঠে, বসতে বললে বসে।
সিবিআইয়ের পেশাদারি দক্ষতা বা যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ নেই। তাঁরা চাইলে খুব দক্ষতার সঙ্গে তদন্ত করতে পারেন, অনেক অজানা দিক টেনে বের করে আনতে পারেন। কিন্তু এই সংস্থা যে স্বাধীনভাবে চলে না, সেটা আর দিনের আলোর থেকেও বেশি পরিষ্কার। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্ক কেমন থাকবে, তার উপর নির্ভর করে তদন্তের গতিপ্রকৃতি।
বিশ্বাস করি, সদিচ্ছা থাকলে সারদা তদন্ত করতে সিবিআইয়ের সাতদিনের বেশি সময় লাগত না। কিন্তু তিন বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর তারা কতটুকু এগোতে পেরেছে? কতটুকু এগোতে চেয়েছে? যেটা সবাই জানে, সেটা সিবিআই জানে না? দিলীপ ঘোষরা এখানে যতই মিছিল বের করুন, যতই হম্বিতম্বি করুন, দিল্লির নেতারা যে তাঁদের কোনও পাত্তাই দেন না, তা প্রতিদিন পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে। অস্ত্র নিয়ে মিছিল না করে যদি মুরোদ থাকে, দলের দিল্লির নেতাদের বলুন সারদার তদন্তে যেন ধামাচাপা না দেওয়া হয়। নারদার কথাই ধরুন। এক বছর পেরিয়ে গেল। পার্লামেন্টে এথিক্স কমিটি একটা বৈঠক পর্যন্ত করতে পারল না। এটা কার লজ্জা?
অনেকে বলেন, দিদি ভাই–মোদি ভাই সেটিং। সরাসরি সেটা করার দরকার পড়ে না। না বলা অনেক কথা থেকে যায়। কেন তদন্ত হচ্ছে, এটাও বলার দরকার পড়ে না। ঠিক আছে, তদন্ত আর হবে না, এটাও বলার দরকার পড়ে না। এগুলো অনুচ্চারিতই থেকে যায়। দরকার পড়লেই সিবিআই শীতঘুমে চলে যায়। শীত ফুরোলো তো কী হয়েছে? গরমের ছুটি তো আসবে। এবার না হয় সিবিআই গরমের ছুটিতেই যাবে।
(এটি ওপেন ফোরামের লেখা। নানা বিষয়ে এমন লেখা আপনিও পাঠাতে পারেন। মনোনীত হলে, প্রকাশিত হবে। মতামত সম্পাদকীয় দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে মিলতেই হবে, এমন নয়। তবে যা বলতে চান, তার পেছেন যেন যুক্তি থাকে, শালীনতা থাকে। সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে আপনারাও লেখা পাঠাতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা: bengaltimes.in@gmail.com)