প্রসূন মিত্র
রাজ্যসভা নির্বাচন এগিয়ে আসছে। এই রাজ্য থেকে কারা রাজ্যসভায় যাবেন, তা মোটামুটি পরিষ্কার। কোন দল কাকে রাজ্যসভায় পাঠাবে, সেটা অনেকটাই সেই দলের নিজস্ব বিষয়। কিন্তু যেহেতু সেই জনপ্রতিনিধিরা এই রাজ্যেরও প্রতিনিধিত্ব করবেন, তাই রাজ্যবাসী হিসেবে মতামত জানানোর অধিকার আমজনতারও আছে।
রাজ্যসভাকে বলা হয় সংসদের উচ্চকক্ষ। অর্থাৎ, এই সভার সদস্যদের যোগ্যতামান অনেক উন্নত হবে, সেটাই কাম্য। কিন্তু ইদানীং একটা অদ্ভুত প্রবণতা দেখা দিয়েছে। এমন এমন লোককে রাজ্যসভায় পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যাঁরা এই রাজ্যসভার মর্মই বোঝেন না। এমনকী দলগুলোও রাজ্যসভার মর্ম বোঝেন কিনা, সেটাই মস্তবড় প্রশ্ন।
এবারের তালিকায় তৃণমূল একেবারে দলীয় বৃত্তের তিনজনকে পাঠালো। বলা যায়, দুজনকে হেরে যাওয়ার পর পুনর্বাসন দিল। আরেকজনকে এতদিন নির্বাচনী এজেন্ট থাকার পুরস্কার দিল। কিন্তু এঁরা রাজ্যসভায় গিয়ে কী করবেন? তার বদলে অনেক বেশি যোগ্য প্রার্থী হতে পারতেন নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি। তিনি মোটামুটি শাসক শিবিরেই আছেন। দেশজুড়ে যখন বিকৃত হিন্দুত্বের আবহ তৈরির চেষ্টা, তখন তা সু্ন্দরভাবে খণ্ডন করতে পারতেন এই কৃতী অধ্যাপক। রামায়ণ, মহাভারত, পুরাণ, গীতা— এসব নিয়ে তাঁর সঙ্গে তর্কে পেরে উঠতেন, সংসদে এমন একজনও আছেন! এমন একজনকে তৃণমূল পাঠালো না কেন? বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বলতেন, হিন্দুত্ব যদি বুঝতেই হয়, বিজেপির কাছে কেন বুঝব ? বুঝলে সুকুমারী ভট্টাচার্যের কাছে বুঝব। আজ সুকুমারী ভট্টাচার্য নেই, নৃসিংহপ্রসাদ তো আছেন।
না, রাজ্যসভা আবির বিশ্বাস, নাদিমুল হক বা শুভাশিস চক্রবর্তীদের জন্য নয়। রাজ্যসভা নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়িদের জন্যই। এই সহজ সত্যিটা বুঝেও বুঝল না শাসক দল।