নন্দ ঘোষের কড়চা
অনেকদিন পর ফের সক্রিয় নন্দ ঘোষ। আর এস এসের সভায় প্রণব মুখার্জির ভাষণ নিয়ে তিনি সোচ্চার। তাই নিয়েই নন্দ ঘোষের কড়চা।।
জ্ঞানীগুণীরা বলে গেছেন, মূর্খের সঙ্গে কখনও তর্ক করতে নেই। কারণ তর্ক করে কখনও মূর্খকে পণ্ডিত বানানো যায় না। বরং এই তর্কের ফলে পণ্ডিতই মূর্খ হয়ে যান। প্রণববাবু অনেক কিছুই জানেন, কিন্তু এই কথাটি জানেন না।
তিনি নাগপুরে আর এস এসের সদর দপ্তরে অনেক ভালো ভালো কথা বলেছেন। কিন্তু বলে কী লাভ হল? যাদের বললেন, তারা তাঁর কথা হৃদয়ে অনুধাবন করল? করল না। করবেও না। কারণ তাদের মগজ আগে থেকেই ধোলাই হয়ে আছে। নেহাত সঙ্ঘের নিজের অনুষ্ঠান, মোহন ভাগবত বসে আছেন, তাই কেউ কিছু বলেনি। সদর দপ্তরের বাইরে কোনও জায়গায় জনা দশেক সঙ্ঘ অনুগামী বা সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির (যেমন বজরং দল, গো রক্ষা সমিতি ইত্যাদি)সামনে সহিষ্ণুতা, গান্ধী, নেহরু,রবীন্দ্রনাথ আউড়ে দেখুন না, কেমন স্বাগত আপনাকে জানায়।
অন্যদের কথা বাদ দিন, সঙ্ঘ অনুগামী চ্যানেলগুলির দিকে তাকিয়ে দেখুন। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই শুরু হয়ে গেছে। না, প্রণববাবুর বক্তৃতার মূল সুরের ধারে কাছে তারা যায়নি। বরং বলা হচ্ছে, প্রণবদা চন্দ্রগুপ্ত, অশোকের কথা বললেন, কিন্তু আকবরের কথা বললেন না। প্রণবদা ভাষণ শেষে বন্দেমাতরম বললেন। প্রণবদা আসলে কংগ্রেসকেই সহিষ্ণুতার পাঠ দিলেন।
তার মানে কি চ্যানেলওয়ালারা প্রণবদার বক্তৃতার অর্থ বোঝেনি? ভালই বুঝেছে। কিন্তু তাদের মগজ আগে থেকেই পদ্ম ফুলের গন্ধে ম ম করছে। তাই তারা বুঝেও বুঝবে না। ঠিক তেমনি, যাদের সামনে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বক্তৃতা দিলেন, তারাও কিছু বুঝবে না। বুঝলেও বুঝবে না।
তারা যা বোঝে, তা ইতিমধ্যেই করা শুরু করে দিয়েছে। প্রণববাবুর ছবি বিকৃত করে ভাইরাল করা হচ্ছে। মোহন ভাগবতরা বললেন, তারা সব মত শোনার পক্ষে। তাই প্রণববাবুকে আমন্ত্রণ করেছেন। যদি এটা সত্যিই মন কি বাত হত, তাহলে এই বিকৃত ছবির নিন্দা করতেন। তেমনটা করেছেন কি?
করবেন না। কারণ তর্ক করে কখনও মূর্খকে পণ্ডিত করা যায় না। প্রণববাবু, বলতে বাধ্য হচ্ছি, আর এস এসকে আপনার থেকে আপনার মেয়ে অনেক ভালভাবে চেনেন।